তাড়াহুড়ায় সিজদাহ করবো না
প্রধান গুরুত্বপূর্ন ইবাদাত হলো নামাজ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমরা সকলেই নামাজ সম্পর্কে উদাসীন। অধিকাংশ মুসলিমই বর্তমানে নামাজ পড়েনা। আর যারা পড়ে তারা তাড়াহুড়ায় পড়ে। এজন্য তাদের হয়তোবা নামাজটাই কবুল হচ্ছেনা। অথবা নামাজের পরির্পর্ণ ফজিলত থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এজন্য প্রতিটা মুসলিমকে নামাজ পড়ার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। নামাজের ভেতরে তাড়াহুড়া করা যাবেনা। বিশেষ করে সিজদাহ ও রুকুতে মোটেও তাড়াহুড়া করা যাবেনা কেননা বেশিরভাগ মানুষই এই দুই জায়গায় তাড়াহুড়া করে।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একবার নবী (সা.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। কিছুক্ষণ পর এক লোক এসে নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে তিনি সোজা নবীজির কাছে এসে সালাম দিলেন। নবীজি তাঁকে বললেন, ‘যাও আবার নামাজ পড়ে এসো।
তোমার নামাজ হয়নি।’ লোকটি চলে গিয়ে ফের নামাজ পড়লেন। নামাজ পড়ে এসে সালাম দিলেন। নবীজি সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, ‘যাও আবার নামাজ পড়ে এসো। তোমার নামাজ হয়নি।’ এভাবে তিনবার হলো। এবার তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহর শপথ, আমি এর চেয়ে সুন্দর করে নামাজ পড়তে পারি না। আমাকে শিখিয়ে দিন।’ তখন নবীজি তাঁকে বললেন, ‘মনোযোগ দিয়ে শোনো। যখন তুমি নামাজে দাঁড়াবে, তাকবির বলবে। এরপর যতটুকু তোমার সাধ্যে কুলায়, কোরআন পড়বে। এরপর রুকুর তাকবির বলে রুকুতে যাবে। একেবারে শান্ত হয়ে রুকু করবে। এরপর সিজদার তাকবির বলে শান্তভাবে সিজদা করবে। এভাবেই পুরো নামাজ আদায় করবে। (বুখারি: ৭৯৩)
আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নামাজ আদায় করবো। নামাজ অতিরিক্ত পড়ার চেয়ে সুন্দরভাবে পড়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক মতো রুকুতে যাবো, রুকু থেকে উঠে দাড়াবো। রুকুতে সময় দিবো বেশি করে। অনুরুপভাবে সিজদায় সময় দিবো বেশি করে। দোয়া কবুলের স্থানই হলো সিজদাহ, আমরা সিজদাহয় বেশি বেশি করে দোয়া করবো, আল্লাহতা'আলার সাথে কথা বলবো। দুই সিজদাহর মাঝে সোজা হয়ে বসবো ও সামান্য সময় নিয়ে বসবো।
নামাজ যতো বুঝে বুঝে পড়া হবে নামাজে তত খুশুখুজু বেশি হবে। অনুরুপ আমরা সিজদাহয় যদি আল্লাহতা'আলার সাথে কথা বলি, ইন্টারেক্ট করি তাহলে নামাজে মনোযোগ বেশি আসবে। কোন নামাজই তখন আর মুখস্থ পড়ার মতো হবেনা।
আল্লাহতা'আলা আমাদের সুন্দরভাবে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন। আমীন।