আল্লাহ তা'আলা আবু নুয়াসকে ক্ষমা করে দেন
আরবদেশে এক বাউন্ডুলে স্বভাবের কবি ছিল। যার উপনাম ছিল, আবু নুয়াস। তার কবিতায় গুনাহে লিপ্ত হওয়ার মতো উত্তেজক কথা থাকত। জীবনভর নিজে গুনাহে লিপ্ত থেকে খাওয়া-দাওয়া আর বাঁধনহারা বিনোদনে আকণ্ঠ মজে ছিল। তার মৃত্যুর পর অন্য এক ব্যক্তি তাকে স্বপ্নে দেখল। স্বপ্নের মধ্যে সে ওই কবিকে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা তোমার মৃত্যুর পর আল্লাহ তাআলা তোমার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন?
জবাবে তিনি বললেন, মৃত্যুর সময় আমি খুব ভয়ে ছিলাম। কারণ আমি কখনো পুণ্যের কাজ করিনি। জীবনভর গুনাহে লিপ্ত ছিলাম। ভেবেছিলাম ত্যুর পর আল্লাহ তাআলা আমাকে এমন শাস্তি দেবেন যে, জীবনের সকল রং তামাশা সাঙ্গ হয়ে যাবে। এটা ভেবে ভেবে আমি অস্থির ছিলাম। এই অস্থির অবস্থায় আমি কবিতার তিনটি পঙ্ক্তি মুখে আওড়াচ্ছিলাম। আমার কবিতার সেই পঙ্ক্তিগুলোর কারণে আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। স্বপ্নের মধ্যে ওই কবি তাকে কবিতার পঙ্ক্তিগুলো শোনালেন। যা নিম্নরূপ,
হে পরওয়ারদিগার, যদিও আমার গুনাহ প্রচুর, সীমাহীন কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আপনার ক্ষমার গুণ আমার গুনাহের তুলনায় সহস্ৰগুণ বেশি।
যদি একমাত্র নেককার লোকেরাই শুধু আপনার রহমতের আশা করতে পারে, তাহলে এই অপরাধী বেচারা কার কাছে যাবে? সে কোন দুয়ারের কড়া নাড়বে?
আমি আজ একান্ত অক্ষমতা নিয়ে আপনার কাছে হাত পেতেছি, আপনি যদি এ হাত প্রত্যাখ্যান করে ফিরিয়ে দেন তাহলে কে এমন আছে যার ওপর আপনি রহম করবেন? [মুখতাসার তারিখে দামেশক ৪২২/২]
কবিতার এই পঙ্ক্তিগুলো যখন তিনি আবৃত্তি করছিলেন, ঠিক সে অবস্থাতেই তার মৃত্যু এসে যায়। অবশেষে এর ওসিলায় আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।
উক্ত পঙ্ক্তিগুলো আবু নুয়াসের কোনো পাণ্ডুলিপিতে ছিল না। কারণ সে তার জীবনের শেষ মুহূর্তে দুনিয়া থেকে বিদায়ের প্রাক্কালে পঙ্ক্তিগুলো লিখেছিল। যার কারণে সে এগুলো তার পাণ্ডুলিপিতে লিখিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায়নি। পরবর্তীতে যিনি স্বপ্নে এই পঙ্ক্তিগুলো পেয়েছিলেন তার উদ্ধৃতিতে সেগুলো আবু নুয়াসের কাব্যগ্রন্থে সংযুক্ত করা হয়।
-- Wafilife.com থেকে সংগৃহীত